Voter List Revision: বিহারের পর এবার পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের মোট ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে শুরু হতে চলেছে ভোটার তালিকার ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধন’ (Special Intensive Revision – SIR)। সোমবার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার এই ঘোষণা করেন। তাঁর লক্ষ্য, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একজনও যোগ্য নাগরিক যেন ভোটার তালিকা থেকে বাদ না পড়েন এবং কোনও অযোগ্য ব্যক্তি যেন তালিকায় স্থান না পান। মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর থেকেই এই প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে।
পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও তামিলনাড়ু, কেরল, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, গোয়া, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুদুচেরি, লাক্ষাদ্বীপ, আন্দামান ও নিকোবরে এই এসআইআর প্রক্রিয়া চলবে। উল্লেখযোগ্যভাবে, পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কেরল এবং পুদুচেরিতে আগামী বছর বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা।
এসআইআর প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ তারিখ
নির্বাচন কমিশন এই সমগ্র প্রক্রিয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সূচি ঘোষণা করেছে। সোমবার মধ্যরাত থেকেই সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির ভোটার তালিকা ‘ফ্রিজ’ করে দেওয়া হয়েছে, অর্থাৎ নতুন নাম তোলা বা সংশোধনের কাজ আপাতত বন্ধ।
| কার্যক্রম | তারিখ |
|---|---|
| এনুমারেশন ফর্ম ছাপানো ও বিএলও-দের প্রশিক্ষণ শুরু | ২৮ অক্টোবর, ২০২৫ |
| বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম বিতরণ ও সংগ্রহ | ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ |
| খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ | ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ |
| দাবি ও আপত্তি জানানোর সময় | ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ থেকে ৮ জানুয়ারি, ২০২৬ |
| অভিযোগ শুনানি ও নিষ্পত্তি | ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ থেকে ৩১ জানুয়ারি, ২০২৬ |
| চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ | ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৬ |
তিনটি ধাপে সম্পন্ন হবে এসআইআর
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি তিনটি ধাপে সম্পন্ন হবে:
- প্রাক-এনুমারেশন: এই পর্বে বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও), নির্বাচনী নিবন্ধন আধিকারিক (ইআরও) এবং অন্যান্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এছাড়াও রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠক করে প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা করা হবে।
- এনুমারেশন: এই পর্বে বিএলও-রা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম বিতরণ ও সংগ্রহ করবেন। কমিশন জানিয়েছে, প্রত্যেক বিএলও প্রতিটি বাড়িতে অন্তত তিনবার যাবেন।
- এনুমারেশন-পরবর্তী পর্যায়: এই ধাপে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ, দাবি ও আপত্তির শুনানি এবং সবশেষে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।
কারা হবেন ভোটার? কী কী নথি লাগবে?
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী, ভোটার হওয়ার জন্য চারটি প্রধান শর্ত রয়েছে:
- ভারতীয় নাগরিক হতে হবে।
- বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি হতে হবে।
- সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা হতে হবে।
- কোনও আইন দ্বারা ভোট দেওয়ার অধিকার বাতিল হওয়া চলবে না।
যাঁদের নাম ২০০২ সালের এসআইআর তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে (ম্যাপিং), এবং নাম বা পিতার নাম পাওয়া গেলে, তাঁদের শুধুমাত্র এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করলেই হবে। অন্যদের ক্ষেত্রে নথি যাচাইয়ের প্রয়োজন হবে।
প্রয়োজনীয় নথিগুলির মধ্যে রয়েছে:
- জন্ম শংসাপত্র
- পাসপোর্ট
- মাধ্যমিক বা উচ্চশিক্ষার শংসাপত্র
- জমি বা বাড়ির দলিল
- ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস বা এলআইসি-র নথি (১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে)
- কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারি পরিচয়পত্র
- আধার কার্ড (তবে এটি নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়)
কমিশন জানিয়েছে, আধার কার্ডের সঙ্গে উপরে উল্লিখিত তালিকা থেকে অন্তত একটি নথি জমা দিতে হবে।
এই প্রক্রিয়ায় বিএলও-দের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম দেওয়া-নেওয়া থেকে শুরু করে নতুন ভোটার নথিভুক্ত করা এবং মৃত বা স্থানান্তরিত ভোটারের নাম চিহ্নিত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি করবেন।


