TET Question Case: কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে ২০২২ সালের টিচার্স এলিজিবিলিটি টেস্ট (TET) সংক্রান্ত প্রশ্নভুল মামলার শুনানিতে এক যুগান্তকারী নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি তব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে ৩১শে অক্টোবরের মধ্যে বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট জমা দেওয়ার কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশের ফলে দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা মামলাটিতে নতুন করে গতি সঞ্চার হয়েছে, যা রাজ্যের হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীদের মনে নতুন করে আশার আলো জাগিয়েছে।
মামলার প্রেক্ষাপট ও বিশেষজ্ঞ কমিটির ভূমিকা
২০২২ সালের টেট পরীক্ষায় ইংরেজি এবং গণিতের বেশ কিছু প্রশ্ন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। মামলাকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে সেই প্রশ্নগুলির নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টের নির্দেশে একটি অতিরিক্ত বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। একটি পূর্ববর্তী ১১ই জুলাইয়ের অর্ডার অনুযায়ী, সেই কমিটিকে তিন সপ্তাহের মধ্যে তাদের রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও পর্ষদ সেই রিপোর্ট জমা না দেওয়ায় মামলাকারীরা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েন। বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য মামলাকারীদের পক্ষ থেকে আদালতে এই বিলম্বের বিষয়টি তুলে ধরেন এবং দ্রুত নিষ্পত্তির আবেদন জানান।
ডিভিশন বেঞ্চে উত্তপ্ত সওয়াল-জবাব
আজকের শুনানিতে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ লক্ষ্য করা যায়। পর্ষদের আইনজীবী সুবিশাল সান্যাল আদালতে জানান যে বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। তবে তারা সেই রিপোর্টটি ডিভিশন বেঞ্চের পরিবর্তে সিঙ্গেল বেঞ্চে জমা দিতে আগ্রহী। তিনি এটিকে একটি “ডিসপোজ ম্যাটার” বলে উল্লেখ করেন এবং ২৩শে আগস্টের একটি অর্ডারের কথা বলেন।
এর তীব্র বিরোধিতা করে মামলাকারীদের পক্ষের আইনজীবী বলেন, এই রিপোর্ট জমা না হওয়ার কারণে চলতি নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি হলেও মামলাকারীরা তাতে অংশ নিতে পারছেন না, যা তাদের ভবিষ্যতের জন্য চরম ক্ষতিকর।
বিচারপতির কড়া অবস্থান ও চূড়ান্ত নির্দেশ
উভয় পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর বিচারপতি তব্রত চক্রবর্তী তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করে দেন। তিনি বলেন, “যেহেতু ডিভিশন বেঞ্চই বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে, তাই সেই রিপোর্ট ডিভিশন বেঞ্চের কাছেই জমা দিতে হবে। আমরা রিপোর্টটি দেখতে চাই, তারপর ট্রায়াল কোর্ট পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।”
| ঘটনা | গুরুত্বপূর্ণ তথ্য |
|---|---|
| বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন | ইংরেজি এবং গণিতের বিতর্কিত প্রশ্ন পর্যালোচনার জন্য। |
| পূর্ববর্তী নির্দেশ | ১১ই জুলাইয়ের অর্ডারে তিন সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল। |
| ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ | রিপোর্ট ডিভিশন বেঞ্চেই জমা দিতে হবে। |
| রিপোর্ট জমার চূড়ান্ত তারিখ | ৩১শে অক্টোবর, ২০২৫ |
প্রথমে বিচারপতি রিপোর্টটি পরের দিনই জমা দেওয়ার কথা বললেও, পর্ষদের আইনজীবী ছটপুজোর ছুটির কারণ দেখিয়ে অপারগতা প্রকাশ করেন। সবদিক বিবেচনা করে ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলাটি পুনরায় ৩১শে অক্টোবর প্রথম ম্যাটার হিসেবে মেনশন করার নির্দেশ দেয় এবং ওই তারিখের মধ্যেই রিপোর্টটি জমা করার চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দেয়। পর্যবেক্ষকদের মতে, মামলাটি যাতে সিঙ্গেল বেঞ্চে গিয়ে আরও বিলম্বিত না হয়, সেই কারণেই বিচারপতি এই কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশের পর এখন তাকিয়ে রয়েছেন রাজ্যের কয়েক হাজার টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থী।


