Banke Bihari Temple: উত্তরপ্রদেশের বৃন্দাবনের বাঁকে বিহারী মন্দির ভারতের অন্যতম প্রসিদ্ধ এবং জনবহুল একটি তীর্থক্ষেত্র। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এই মন্দিরকে ঘিরে ভক্তদের আবেগ এবং বিশ্বাস বহুদিনের। সম্প্রতি এই মন্দির এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকল। দীর্ঘ ৫৪ বছর পর মন্দিরের গর্ভগৃহ সংলগ্ন কোষাগার বা ভান্ডার ঘরের দরজা খোলা হল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুণ্যার্থীদের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহল তৈরি হয়েছে। শেষবার এই কোষাগার খোলা হয়েছিল ১৯৭১ সালে, তারপর থেকে এটি বন্ধই ছিল।
পরিদর্শন কাজের জন্য এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। শনিবার এবং রবিবার, এই দুই দিন ধরে গর্ভগৃহের পাশে অবস্থিত এই ভান্ডার ঘরটি খোলা হয়। দীর্ঘ পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকা এই ঘরের ভেতরে কী থাকতে পারে, তা নিয়ে জল্পনা ছিল তুঙ্গে। আধিকারিকদের উপস্থিতিতে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে কোষাগারের তালা খোলা হয় এবং ভেতরের সামগ্রী খতিয়ে দেখা হয়।
ভান্ডার ঘর থেকে কী কী পাওয়া গেল?
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর কোষাগার খুলে বেশ কিছু ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী পাওয়া গিয়েছে। বছরের পর বছর ধরে বন্ধ থাকা কাঠের বাক্স থেকে মিলেছে সোনা ও রুপোর লাঠি, প্রাচীন মুদ্রা এবং আরও কিছু জিনিস। প্রাপ্ত সামগ্রীর তালিকা বেশ আকর্ষণীয়। এই প্রসঙ্গে এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “একটি বাক্স থেকে দুটি তামার মুদ্রা এবং অন্যটিতে তিন থেকে চারটি পাথর পাওয়া গিয়েছে। তিনটি রুপোর লাঠি এবং একটি সোনার লাঠি পাওয়া গিয়েছে অন্য একটি বাক্সে।” এই সামগ্রীগুলি মন্দিরের ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক গুরুত্ব বহন করে।
প্রাপ্ত সামগ্রীর একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা নিচে দেওয়া হল:
| প্রাপ্ত সামগ্রী | বিবরণ |
|---|---|
| সোনার লাঠি | ১টি (আবির লাগানো) |
| রুপোর লাঠি | ৩টি (আবির লাগানো) |
| তামার মুদ্রা | ২টি |
| পাথর | ৩ থেকে ৪টি |
| কাঠের বাক্স | একাধিক |
আবির লাগানো লাঠির তাৎপর্য
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, উদ্ধার হওয়া সোনা এবং রুপোর লাঠিগুলির উপর আবির লাগানো ছিল। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সম্ভবত হোলি উৎসবের সময় মন্দিরের প্রধান বিগ্রহ ‘ঠাকুরজি’ এই লাঠিগুলি ব্যবহার করতেন। বাঁকে বিহারী, যিনি রাধা এবং কৃষ্ণের মিলিত রূপ বলে পূজিত হন, তাঁর হোলি খেলা জগৎবিখ্যাত। তাই এই আবির মাখা লাঠিগুলির ধর্মীয় এবং ভাবনাত্মক মূল্য অপরিসীম। এই আবিষ্কার মন্দিরের পুরনো ঐতিহ্যের এক ঝলক তুলে ধরেছে সকলের সামনে। দীর্ঘ ৫৪ বছর পর এই পবিত্র সামগ্রীগুলির দর্শন পাওয়া নিঃসন্দেহে এক বিরল অভিজ্ঞতা।
সব মিলিয়ে, বাঁকে বিহারী মন্দিরের কোষাগার খোলা এবং তার থেকে প্রাপ্ত সামগ্রী এক ঐতিহাসিক ঘটনা। এটি শুধুমাত্র মন্দিরের ধনসম্পদের হিসেব নয়, বরং তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা কয়েক দশকের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং ভক্তির প্রমাণ। এই ঘটনা ভক্তদের মনে নতুন করে উন্মাদনা তৈরি করেছে এবং মন্দিরের গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।


