ATM Invention Story: আজকের ডিজিটাল যুগে টাকা তোলা যেন কয়েক সেকেন্ডের ব্যাপার। বাড়ির কাছের ATM কাউন্টারে গেলেই যখন খুশি টাকা হাতে চলে আসে। ছুটির দিন হোক বা মাঝরাত, টাকার প্রয়োজনে আমাদের আর ব্যাংকের খোলার সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। কিন্তু আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন, যে যন্ত্রটি আমাদের জীবনকে এতটা সহজ করে দিয়েছে, তার আবিষ্কারের পেছনে কী গল্প লুকিয়ে আছে? এর পেছনের কাহিনীটি জানলে আপনি অবাক হতে বাধ্য হবেন, কারণ এর জন্ম হয়েছিল নিছকই এক মিনিটের দেরির কারণে।
এক মিনিটের আক্ষেপ থেকে জন্ম নেওয়া ভাবনা
ঘটনাটি ঘটেছিল জন শেফার্ড ব্যারন নামের এক ব্যক্তির সাথে। তিনি একদিন নিজের প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে গিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, তিনি যখন ব্যাংকের দরজায় পৌঁছান, তখন সবেমাত্র এক মিনিট দেরি হয়ে গেছে। তার চোখের সামনেই ব্যাংকের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। জরুরি প্রয়োজনে টাকা তুলতে না পারার সেই মুহূর্তে তার মনে তীব্র হতাশা এবং বিরক্তি তৈরি হয়। বন্ধ দরজার দিকে তাকিয়ে ভাবতে থাকেন, এমন যদি কোনো ব্যবস্থা থাকত, যা ব্যাংকের সময়ের ওপর নির্ভরশীল নয়!
ঠিক সেই হতাশার মুহূর্তেই তার মাথায় এক যুগান্তকারী ভাবনা আসে। তিনি নিজেকে প্রশ্ন করেন, “যদি এমন একটা মেশিন থাকত, যেখান থেকে ২৪ ঘণ্টা টাকা তোলা যায়, তাহলে কেমন হতো?” এই একটি প্রশ্নই ছিল পৃথিবীর ব্যাংকিং ব্যবস্থা বদলে দেওয়ার প্রথম ধাপ। এই ভাবনাটি নিছক কল্পনাতেই থেমে থাকেনি, বরং এটি বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য তিনি কাজ শুরু করেন।
যুগান্তকারী আবিষ্কারের জন্ম
জন শেফার্ড ব্যারনের সেই এক মিনিটের আক্ষেপ থেকেই জন্ম নেয় পৃথিবীর প্রথম অটোমেটেড টেলার মেশিন বা ATM। তার এই ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে খুব বেশি সময় লাগেনি। ১৯৬৭ সালে, এই যুগান্তকারী যন্ত্রটি প্রথম জনসমক্ষে আসে এবং ব্যাংকিং দুনিয়ায় এক নতুন বিপ্লবের সূচনা করে। ভাবুন একবার, একজন মানুষের সামান্য দেরিতে পৌঁছানোর ঘটনা না ঘটলে হয়তো এই প্রয়োজনীয় যন্ত্রটির আবিষ্কার হতে আরও অনেক দেরি হয়ে যেত।
আজ আমরা বিশ্বজুড়ে যে কোটি কোটি ATM মেশিন দেখি এবং অনায়াসে টাকা লেনদেন করি, তার পুরো কৃতিত্বই যায় জন শেফার্ড ব্যারনের সেই দিনের অভিজ্ঞতার কাছে। তার গল্প আমাদের এটাই শেখায় যে, অনেক সময় জীবনের ছোটখাটো সমস্যা বা অসুবিধাই বড় কোনো সমাধানের জন্ম দেয়। তাই পরেরবার যখন আপনি ATM থেকে টাকা তুলবেন, তখন একবার হলেও সেই মানুষটির কথা মনে করবেন, যার এক মিনিটের দেরি আপনার আমার জীবনকে এতটা সহজ করে দিয়েছে।


