EPFO Rules Change: কর্মচারী ভবিষ্যনিধি সংস্থা (Employees’ Provident Fund Organization – EPFO) তার আংশিক টাকা তোলার নিয়মে একটি বড়সড় পরিবর্তন এনেছে, যা লক্ষ লক্ষ গ্রাহকের জন্য স্বস্তির খবর। সম্প্রতি, EPFO-এর সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ (CBT) একটি বৈঠকে কিছু নিয়ম শিথিল করেছে, যার ফলে এখন সদস্যদের জন্য টাকা তোলা আগের চেয়ে অনেক বেশি সহজ হবে। এই নতুন নিয়মগুলি, বিশেষ করে বেকারত্বের ক্ষেত্রে টাকা তোলার বিষয়ে বিভ্রান্তি দূর করার জন্য কেন্দ্রীয় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রক একটি বিবৃতিও জারি করেছে।
বেকারত্বের ক্ষেত্রে টাকা তোলার নতুন নিয়ম
EPFO-এর নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যদি কোনো কর্মচারী চাকরি হারানোর কারণে তার সম্পূর্ণ EPF ব্যালেন্স তুলে নিতে চান, তবে তাকে এখন ১২ মাস অপেক্ষা করতে হবে। আগে এই সময়কাল ছিল মাত্র ২ মাস। তবে, একটি বড় সুবিধা দেওয়া হয়েছে। চাকরি হারানোর পরেই গ্রাহকরা তাদের পিএফ ব্যালেন্সের ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত তুলে নিতে পারবেন।
- এই ৭৫ শতাংশের মধ্যে কর্মচারী এবং নিয়োগকর্তার অবদান এবং অর্জিত সুদ উভয়ই অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
- বাকি ২৫ শতাংশ ব্যালেন্স এক বছর পরে তোলা যাবে।
এছাড়াও, ৫৫ বছর বয়সের পর অবসর গ্রহণ, স্থায়ী অক্ষমতা, কর্মহীনতা, ছাঁটাই, বা স্থায়ীভাবে ভারত ত্যাগ করার মতো পরিস্থিতিতে সম্পূর্ণ ১০০ শতাংশ পিএফ তোলার অনুমতি রয়েছে।
আংশিক টাকা তোলার নিয়মে বড় বদল
EPFO তার সদস্যদের জন্য আংশিক টাকা তোলার নিয়ম উল্লেখযোগ্যভাবে শিথিল করেছে। বিভিন্ন ধরনের ১৩টি আংশিক উত্তোলনের বিধানকে একত্রিত করে একটি সরল কাঠামো তৈরি করা হয়েছে।
- ন্যূনতম পরিষেবার সময়কাল হ্রাস: আগে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আংশিক টাকা তোলার জন্য ন্যূনতম পরিষেবার সময়কাল ৭ বছর পর্যন্ত ছিল। এখন সমস্ত আংশিক উত্তোলনের জন্য এই সময়কাল কমিয়ে মাত্র ১২ মাস করা হয়েছে।
- উত্তোলনের পরিমাণ বৃদ্ধি: এতদিন পর্যন্ত সদস্যরা শুধুমাত্র নিজেদের অবদান এবং তার ওপর প্রাপ্ত সুদ তুলতে পারতেন। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, আংশিক উত্তোলনের জন্য যোগ্য ব্যালেন্সের মধ্যে এখন নিয়োগকর্তার অবদানও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে উত্তোলনের যোগ্য অর্থের পরিমাণ আগের চেয়ে অনেকটাই বাড়বে।
কেন ২৫% ন্যূনতম ব্যালেন্স রাখা বাধ্যতামূলক?
EPFO একটি নতুন নিয়ম চালু করেছে যেখানে সদস্যদের তাদের EPF অ্যাকাউন্টে সর্বদা তাদের অবদানের পরিমাণের ন্যূনতম ২৫ শতাংশ ব্যালেন্স বজায় রাখতে হবে। এর মূল উদ্দেশ্য হল অবসরকালীন তহবিলের সঞ্চয় নিশ্চিত করা এবং সুদের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। শ্রম মন্ত্রকের মতে, ঘন ঘন টাকা তোলার কারণে অবসরের সময় পিএফ ব্যালেন্স খুব কম হয়ে যায়। এই সমস্যা সমাধানের জন্যই এই নতুন নিয়ম আনা হয়েছে।
বিশেষ পরিস্থিতিতে টাকা তোলার নিয়ম আরও সহজ
আংশিক টাকা তোলার জন্য ১৩টি জটিল বিধানকে সহজ করে তিনটি প্রধান বিভাগে ভাগ করা হয়েছে:
- অপরিহার্য প্রয়োজন: অসুস্থতা, শিক্ষা এবং বিবাহের মতো জরুরি প্রয়োজন।
- আবাসিক প্রয়োজন: বাড়ি তৈরি বা কেনার জন্য।
- বিশেষ পরিস্থিতি: প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সংস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
একটি বড় সুবিধা হল, এখন থেকে বিশেষ পরিস্থিতিতে টাকা তোলার জন্য কোনো কারণ দর্শানোর প্রয়োজন হবে না। আগে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সংস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়া বা মহামারীর মতো কারণ দেখাতে হতো, যার ফলে অনেক সময় আবেদন বাতিল হয়ে যেত। এছাড়াও, এখন সদস্যরা শিক্ষার জন্য ১০ বার এবং বিবাহের জন্য ৫ বার তাদের EPF থেকে টাকা তুলতে পারবেন, যা আগে উভয় ক্ষেত্রেই মাত্র তিনবার সম্ভব ছিল।


