Indian Economy: বিশ্বের দরবারে ভারত প্রতিনিয়ত নিজের শক্তি ও সামর্থ্যের নতুন পরিচয় দিচ্ছে। কখনও প্রযুক্তিতে, কখনও অর্থনীতিতে, আবার কখনও উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভারত এমন সব নজির গড়ছে যা উন্নত দেশগুলোকেও অবাক করে দিচ্ছে। সম্প্রতি এমনই দুটি তথ্য সামনে এসেছে যা প্রত্যেক ভারতীয়কে গর্বিত করবে। একদিকে যেমন ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ ট্যাগলাইন নিয়ে রাশিয়ার মতো শক্তিশালী দেশের সেনাবাহিনীর জন্য জুতো তৈরি হচ্ছে, তেমনই অন্যদিকে ভারতীয় পরিবারগুলির কাছে সঞ্চিত সোনার পরিমাণ তাবড় তাবড় দেশের অর্থনীতিকেও হার মানাতে পারে।
বিহার থেকে মস্কো: ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ বুটের বিশ্বজয়
একথা শুনলে অনেকেই হয়তো অবাক হবেন যে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী সেনাবাহিনী, রাশিয়ান আর্মির জওয়ানরা যে সেফটি বুটস পরেন, তা তৈরি হয় ভারতের বিহারে। হ্যাঁ, বিহারের হাজিপুরের কম্পিটিশন এক্সপোর্টস (Competition Exports) নামক একটি সংস্থা ২০১৬ সাল থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করে আসছে। শুধু রাশিয়াতেই নয়, এই সংস্থার তৈরি জুতো ইউরোপের একাধিক দেশেও রপ্তানি করা হয়, যা ভারতের উৎপাদন শিল্পের জন্য এক বিরাট সাফল্যের নিদর্শন।
তথ্য অনুযায়ী, গত বছর এই সংস্থাটি রাশিয়ায় প্রায় ১৮ লক্ষ জোড়া বুট পাঠিয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ জুতোর মোট আর্থিক মূল্য প্রায় ₹১০০ কোটি! তবে সবথেকে গর্বের এবং অনুপ্রেরণার বিষয়টি হলো, এই কারখানার প্রায় ৭০ শতাংশ কর্মীই হলেন মহিলা। গ্রামীণ ভারতের মহিলারা যেভাবে দেশের উৎপাদনশীলতায় নিজেদের অবদান রেখে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছেন, তা এক কথায় অবিশ্বাস্য। এই সাফল্য ‘আত্মনির্ভর ভারত’ এবং ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ অভিযানের এক জ্বলন্ত উদাহরণ।
আসল ‘সোনার চিড়িয়া’: ভারতীয় পরিবারে রয়েছে ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের সোনা!
অন্যদিকে, সম্প্রতি বিখ্যাত আর্থিক সংস্থা মরগ্যান স্ট্যানলি (Morgan Stanley)-র একটি রিপোর্ট ভারতের এক ভিন্ন অর্থনৈতিক শক্তিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছে। এই রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতীয় পরিবারগুলির কাছে সম্মিলিতভাবে প্রায় ৩৫,০০০ টন সোনা রয়েছে! আজকের বাজারে যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৪ ট্রিলিয়ন ডলার।
সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য হলো, এই বিপুল পরিমাণ সোনার মূল্য ভারতের মোট জিডিপি (GDP)-র প্রায় সমান। বিশ্বের অন্য কোনো দেশের সাধারণ মানুষের কাছে এত বিপুল পরিমাণে সোনা গচ্ছিত নেই। এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে দেয় যে ভারতকে কেন একসময় ‘সোনার চিড়িয়া’ বা “Golden Bird” বলা হতো এবং আজও সেই তকমা অনেকাংশেই সত্যি। এই সঞ্চিত সোনা শুধুমাত্র পারিবারিক সম্পদই নয়, দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার এক নীরব স্তম্ভও বটে।
সুতরাং, একদিকে যেমন ভারতের শিল্প এবং নারীশক্তি বিশ্বজুড়ে নিজেদের ছাপ ফেলছে, তেমনই অন্যদিকে দেশের সাধারণ মানুষের সঞ্চয়ের অভ্যাস ভারতকে এক কল্পনাতীত আর্থিক সুরক্ষা প্রদান করছে। এই দুটি ভিন্ন চিত্রই একসঙ্গে শক্তিশালী ভারতের এক নতুন পরিচয় তৈরি করছে।
“`


