Bangladesh Rice Import: বাংলাদেশের খাদ্য আমদানি নীতি নিয়ে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে, যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা। জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশ সরকার এখন প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে সরাসরি চাল আমদানি না করে, সেই একই চাল সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে প্রায় দ্বিগুণ দামে কিনছে। এই ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে, কারণ এই অতিরিক্ত খরচের বোঝা শেষ পর্যন্ত তাদের কাঁধেই চাপছে।
চাল আসছে অদ্ভুত পথে
সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে যে চাল আমদানি করা হচ্ছে, তার উৎসও কিন্তু ভারত। অর্থাৎ, একটি অত্যন্ত সহজ এবং সুলভ পথ থাকা সত্ত্বেও এক জটিল এবং ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে। প্রক্রিয়াটি অনেকটা এইরকম:
- প্রথম ধাপ: ভারতের চাষীদের কাছ থেকে চাল সংগ্রহ করে রপ্তানিকারকরা তা জাহাজে করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাঠাচ্ছেন।
- দ্বিতীয় ধাপ: ইউএই-তে সেই চাল পৌঁছানোর পর, তা আবার নতুন করে প্যাকেজিং এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বাংলাদেশের জন্য জাহাজে তোলা হচ্ছে।
- তৃতীয় ধাপ: অবশেষে, সেই ভারতীয় চাল ইউএই ঘুরে বাংলাদেশে পৌঁছাচ্ছে।
এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ফলে শুধুমাত্র সময় নষ্ট হচ্ছে না, বরং পরিবহন এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে চালের দাম আকাশছোঁয়া হয়ে যাচ্ছে। যে চাল সরাসরি ভারত থেকে আমদানি করলে অনেক কম খরচে পাওয়া যেত, সেটাই এখন প্রায় দ্বিগুণ দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছে বাংলাদেশ।
মূল্যবৃদ্ধির বোঝা সাধারণ মানুষের কাঁধে
চাল বাঙালির প্রধান খাদ্য। এর দামের সামান্যতম পরিবর্তনও দেশের কোটি কোটি সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। ভারত থেকে সরাসরি চাল না কিনে ইউএই থেকে প্রায় দ্বিগুণ দামে কেনার এই সিদ্ধান্তের ফলে বাজারে চালের দাম বাড়ছে। এর ফলে নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত পরিবারগুলির উপর প্রচণ্ড আর্থিক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এই খাদ্যদ্রব্যটি কিনতেই তাদের আয়ের একটি বড় অংশ বেরিয়ে যাচ্ছে, যা তাদের জীবনযাত্রার মানকে আরও কঠিন করে তুলছে।
নেপথ্যে কি রাজনৈতিক টানাপোড়েন?
কেন এমন একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর পেছনে অর্থনৈতিক যুক্তির চেয়ে রাজনৈতিক কারণই বেশি প্রকট। মনে করা হচ্ছে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যেকার রাজনৈতিক টানাপোড়েনের জেরেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যদিও কোনো পক্ষই এই বিষয়ে সরাসরি মুখ খোলেনি, তবে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং বাণিজ্যের এই জটিল খেলায় যে সাধারণ মানুষ বলির পাঁঠা হচ্ছেন, তা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের এই চড়া দাম এখন গুনতে হচ্ছে দেশের সাধারণ নাগরিকদের, তাদের নিজেদের পকেটের টাকা দিয়ে।


