INS Vishal: ভারতীয় নৌবাহিনীর ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। দেশের সামুদ্রিক সুরক্ষা এবং সামরিক শক্তিকে এক ধাক্কায় কয়েক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভারত সরকার তৃতীয় এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ার তৈরির পরিকল্পনায় পুনরায় অনুমোদন দিয়েছে। এই অত্যাধুনিক রণতরীর নাম INS Vishal, যা ভবিষ্যতে ভারতীয় নৌবাহিনীর ফ্ল্যাগশিপ হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় একটি গেম-চেঞ্জার হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই নতুন সুপার এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ারটি শুধুমাত্র দেশের সামুদ্রিক সীমা রক্ষা করবে না, বরং ভারত মহাসাগর অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
INS Vishal-এর বিশেষত্ব
আইএনএস বিশাল (INS Vishal) হতে চলেছে ভারতের তৈরি সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী যুদ্ধজাহাজ। এর কিছু সম্ভাব্য স্পেসিফিকেশন নিম্নরূপ, যা এটিকে বিশ্বের অন্যতম সেরা এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ারের তালিকায় স্থান দেবে।
| বৈশিষ্ট্য | বিবরণ |
|---|---|
| ওজন | ৬৫,০০০ থেকে ৭৫,০০০ টন |
| দৈর্ঘ্য | প্রায় ৩০০ মিটার |
| গতি | ৩০ নট (প্রায় ৫৬ কিমি/ঘণ্টা) |
| বিমান বহন ক্ষমতা | মোট ৫৫টি (৩৫টি ফিক্সড-উইং যুদ্ধবিমান ও ২০টি হেলিকপ্টার) |
| অতিরিক্ত ক্ষমতা | অত্যাধুনিক ড্রোন ফ্লিট |
| আনুমানিক খরচ | ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি |
নিউক্লিয়ার প্রপালশন: সীমাহীন শক্তি
আইএনএস বিশালের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হতে চলেছে এর নিউক্লিয়ার প্রপালশন সিস্টেম। এই পারমাণবিক শক্তিচালিত ব্যবস্থার ফলে ক্যারিয়ারটিকে প্রচলিত জাহাজের মতো ঘন ঘন জ্বালানি ভরার জন্য বন্দরে ফিরতে হবে না। এটি প্রায় সীমাহীন সময় ধরে সমুদ্রে অপারেশন চালাতে পারবে, যা দীর্ঘমেয়াদী মিশনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রযুক্তিগত দিক থেকে আইএনএস বিশাল চীনের সম্প্রতি চালু হওয়া ফুজিয়ান ক্যারিয়ারের থেকেও উন্নত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ফুজিয়ান প্রচলিত শক্তিতে চলে, যেখানে বিশাল চলবে পারমাণবিক শক্তিতে।
কৌশলগত গুরুত্ব
ভারত মহাসাগর এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে কৌশলগত স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য আইএনএস বিশাল ভারতের হাতে একটি বড় অস্ত্র হয়ে উঠবে। বর্তমানে ভারতের কাছে আইএনএস বিক্রমাদিত্য এবং আইএনএস विक्रांत নামক দুটি এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ার রয়েছে। তৃতীয় ক্যারিয়ারটি নৌবাহিনীর শক্তিকে বহুগুণ বাড়িয়ে তুলবে। এর ফলে ভারত একসঙ্গে দুটি ভিন্ন দিকে ক্যারিয়ার ব্যাটল গ্রুপ মোতায়েন রাখতে পারবে এবং তৃতীয়টিকে রক্ষণাবেক্ষণ বা আপগ্রেডেশনের জন্য ব্যবহার করতে পারবে।
৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি আনুমানিক ব্যয়ে নির্মিত হতে চলা এই সুপার ক্যারিয়ারটি ‘আত্মনির্ভর ভারত’ অভিযানের একটি বড় প্রতীক হয়ে উঠবে এবং বিশ্বমঞ্চে ভারতের সামরিক শক্তিকে নতুনভাবে প্রতিষ্ঠা করবে।


