Artificial Rain: ক্রমবর্ধমান দূষণের ফলে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে রাজধানীবাসীকে মুক্তি দিতে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে দিল্লি সরকার। সম্প্রতি দূষণের মাত্রা কমাতে এক অভিনব উদ্যোগ হিসেবে ‘কৃত্রিম বৃষ্টি’ (Artificial Rain) ঘটানোর প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষা চালানো হয়েছে এবং কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে এই পরীক্ষা সফল হয়েছে। দিল্লির আকাশে মেঘ তৈরি করে বৃষ্টি নামানোর এই বৈপ্লবিক প্রকল্পটি শহরবাসীর মনে নতুন করে আশা জাগিয়েছে।
এই পুরো প্রক্রিয়াটির পিছনে রয়েছে উন্নত প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞান। দিল্লি সরকারকে এই প্রকল্পে বিশেষভাবে সহায়তা করেছে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, কানপুর (IIT Kanpur)-এর একদল মেধাবী শিক্ষার্থী ও গবেষক। তাদের হাত ধরেই বাস্তবায়িত হয়েছে এই ক্লাউড সিডিং (Cloud Seeding) প্রযুক্তি।
ক্লাউড সিডিং প্রযুক্তি আসলে কী?
ক্লাউড সিডিং হলো একটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি যার মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে বৃষ্টিপাত ঘটানো হয়। এই প্রক্রিয়ায়, বিমানের মাধ্যমে আকাশে মেঘের মধ্যে কিছু বিশেষ রাসায়নিক পদার্থ, যেমন সিলভার আয়োডাইড, ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এই রাসায়নিক কণাগুলো বাতাসে ভাসমান জলীয় বাষ্পকে ঘনীভূত হতে সাহায্য করে এবং ছোট ছোট জলকণাকে একত্রিত করে বৃষ্টির ফোঁটায় পরিণত করে। এরপর সেই ফোঁটাগুলো মাধ্যাকর্ষণের টানে বৃষ্টি হিসেবে মাটিতে নেমে আসে। দিল্লির ক্ষেত্রেও ঠিক এই পদ্ধতিই অনুসরণ করা হয়েছে।
মূল লক্ষ্য দূষণমুক্ত পরিবেশ
এই উদ্যোগের প্রধান এবং একমাত্র লক্ষ্য হলো দিল্লির বাতাসকে দূষণের ভয়াবহ গ্রাস থেকে মুক্ত করা। কৃত্রিম বৃষ্টির মাধ্যমে বাতাসে ভেসে থাকা ধূলিকণা (Particulate Matter) এবং অন্যান্য দূষিত পদার্থ ধুয়ে মাটিতে নেমে আসবে, যার ফলে বায়ুর গুণগত মানের উন্নতি ঘটবে। এর ফলে দিল্লির বাতাস আবারও শ্বাসযোগ্য হয়ে উঠবে এবং সাধারণ মানুষ স্বস্তিতে নিঃশ্বাস নিতে পারবে।
এই উদ্যোগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক:
- সহযোগিতা: দিল্লি সরকার এবং আইআইটি কানপুরের যৌথ প্রচেষ্টা।
- প্রযুক্তি: ক্লাউড সিডিং ব্যবহার করে কৃত্রিম মেঘ তৈরি।
- সাফল্য: প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন।
- উদ্দেশ্য: বায়ু দূষণ কমিয়ে জনস্বাস্থ্য রক্ষা করা।
প্রযুক্তি যখন শুধুমাত্র বিনোদন বা বিলাসিতার জন্য নয়, বরং মানবতার সেবায় সরাসরি কাজে লাগে, তখন তা এক নতুন দিগন্তের সূচনা করে। দিল্লির এই কৃত্রিম বৃষ্টির উদ্যোগ তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। যদি এই প্রকল্প সম্পূর্ণরূপে সফল হয়, তবে তা শুধুমাত্র দিল্লির জন্য নয়, সারা দেশের অন্যান্য দূষিত শহরগুলোর জন্যও এক নতুন পথের দিশা দেখাবে। প্রকৃতি এবং প্রযুক্তির এই মেলবন্ধনে প্রকৃতিও যেন স্বস্তির হাসি হাসছে।


