Made in India C-295: ভারত এক নতুন ঐতিহাসিক অধ্যায়ের সূচনা করেছে, যেখানে দেশ আর শুধু প্রযুক্তির গ্রাহক নয়, বরং নিজেই উন্নত প্রযুক্তির নির্মাতা হিসেবে বিশ্বমঞ্চে উঠে আসছে। এই গর্বের সবচেয়ে বড় প্রতীক হয়ে উঠেছে দেশের প্রথম সম্পূর্ণ “মেড ইন ইন্ডিয়া” C-295 সামরিক বিমান। এটি কেবল একটি আকাশযান নয়, বরং ১৩০ কোটি ভারতবাসীর স্বপ্ন এবং আত্মবিশ্বাসের এক মূর্ত প্রতীক, যা প্রমাণ করে যে নতুন ভারত তার ভবিষ্যৎ নিজের হাতেই গড়তে সক্ষম।
গুজরাটের ভদোদরা শহরে টাটা গোষ্ঠীর নেতৃত্বে এই বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। এখানেই তৈরি হচ্ছে দেশের প্রথম নিজস্ব সামরিক পরিবহন বিমান। এই প্রকল্পটি শুধুমাত্র প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতের আত্মনির্ভরতার একটি বড় পদক্ষেপ নয়, এটি দেশের শিল্প ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতিরও এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। টাটার মতো একটি ভারতীয় সংস্থার নেতৃত্বে এই ধরনের একটি জটিল এবং আধুনিক যুদ্ধবিমান তৈরি হওয়া দেশের ইঞ্জিনিয়ারিং এবং উৎপাদন ক্ষমতার প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থাকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে।
আত্মনির্ভর ভারতের পথে এক নতুন দিগন্ত
C-295 বিমান প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর “আত্মনির্ভর ভারত” আহ্বানের এক বাস্তব রূপ। এতদিন পর্যন্ত ভারত মূলত বিদেশি সংস্থার উপর সামরিক বিমানের জন্য নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু এই প্রকল্পের মাধ্যমে সেই নির্ভরতা কাটিয়ে ওঠার পথে এক বিরাট লাফ দিল দেশ। এর ফলে শুধুমাত্র দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাই মজবুত হবে না, বরং দেশীয় প্রযুক্তির বিকাশ এবং কর্মসংস্থান তৈরিতেও এক নতুন দিকের সূচনা হবে।
এই প্রকল্পের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো:
- সম্পূর্ণ দেশীয় উৎপাদন: এটিই প্রথম সামরিক বিমান যা সম্পূর্ণভাবে ভারতে তৈরি হচ্ছে।
- সময়সীমা: ২০২৬ সালের মধ্যেই এই আধুনিক যুদ্ধবিমানটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
- বায়ুসেনার শক্তি বৃদ্ধি: এই বিমানটি ভারতীয় বায়ুসেনার অন্তর্ভুক্ত হলে তাদের কৌশলগত এবং পরিবহন ক্ষমতা এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।
ভবিষ্যতের পথে ভারতের উড়ান
এই C-295 বিমানটি শুধু ইট-পাথরের কাঠামো বা ধাতব ডানা নয়, এটি ভারতের প্রকৌশলী, বিজ্ঞানী এবং শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রম এবং মেধার ফসল। এটি প্রমাণ করে যে সঠিক সুযোগ এবং পরিকাঠামো পেলে ভারতীয় প্রতিভারা যেকোনো অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলতে পারে।
২০২৬ সালে যখন প্রথম ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ C-295 বিমান ভারতীয় বায়ুসেনার গর্বিত অংশ হয়ে আকাশে উড়বে, সেই মুহূর্তটি দেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এটি হবে এক নতুন ভারতের উড়ান, যে ভারত নিজের আকাশসীমা রক্ষার জন্য নিজের তৈরি আকাশযান ব্যবহার করে এবং নিজের ভবিষ্যৎ নিজেই তৈরি করে। এই প্রকল্প আগামী প্রজন্মের কাছে এক অসীম অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
“`


