President Murmu Helicopter: কেরলে এক অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাক্ষী থাকল গোটা দেশ। ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হেলিকপ্টার অবতরণের সময় এক মারাত্মক বিপত্তি ঘটে, যা মুহূর্তের মধ্যে নিরাপত্তা আধিকারিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। সৌভাগ্যবশত, এই ঘটনায় কোনও বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটেনি এবং রাষ্ট্রপতি সহ সকল যাত্রী সম্পূর্ণ সুরক্ষিত ছিলেন। তবে এই ঘটনা রাষ্ট্রপতির মতো একজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তির নিরাপত্তা প্রোটোকল এবং প্রশাসনিক প্রস্তুতি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে কেরলের পাথানামথিট্টা জেলার প্রমাদম স্টেডিয়ামে, যেখানে রাষ্ট্রপতির জন্য একটি নতুন কংক্রিটের হেলিপ্যাড তৈরি করা হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু পবিত্র সাবারিমালা মন্দির দর্শন করে ফিরছিলেন। তাঁর হেলিকপ্টারটি যখন প্রমাদম স্টেডিয়ামের ওই নবনির্মিত হেলিপ্যাডে অবতরণ করে, তখনই বিপত্তি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
ঠিক কী ঘটেছিল হেলিপ্যাডে?
প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ এবং প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, হেলিকপ্টারটি অবতরণের পরেই এর একটি চাকা ধীরে ধীরে কংক্রিটের মধ্যে ডুবে যেতে শুরু করে। দেখা যায়, হেলিপ্যাডটি তৈরি করা হলেও, তার কংক্রিট তখনও পুরোপুরি শক্ত এবং ভার বহনের জন্য প্রস্তুত হয়নি। হেলিকপ্টারের বিপুল ওজনের চাপে নরম কংক্রিট বসে যেতে থাকে, যার ফলে চাকাটি ভিতরে ঢুকে যায়।
এই দৃশ্য চোখে পড়তেই রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকা কর্মকর্তা এবং স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকদের মধ্যে তীব্র চাঞ্চল্য ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তের জন্য এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি হয়। যদি হেলিকপ্টারটি ভারসাম্য হারাতো বা কাত হয়ে যেত, তবে একটি বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত। তবে পাইলটের দক্ষতা এবং পরিস্থিতির দ্রুত নিয়ন্ত্রণের ফলে তেমন কোনও বিপদ ঘটেনি।
- ঘটনার স্থান: প্রমাদম স্টেডিয়াম, পাথানামথিট্টা, কেরল।
- প্রেক্ষাপট: সাবারিমালা দর্শন শেষে প্রত্যাবর্তন।
- সমস্যা: নবনির্মিত হেলিপ্যাডের কংক্রিট শক্ত না হওয়া।
- ফলাফল: হেলিকপ্টারের চাকা কংক্রিটে ডুবে যায়।
তদন্তের মুখে প্রশাসনিক গাফিলতি
এই ঘটনার পর রাষ্ট্রপতি এবং অন্যান্য সকল যাত্রীকে সম্পূর্ণ নিরাপদে হেলিকপ্টার থেকে বের করে আনা হয়। তাঁদের কারও কোনও আঘাত লাগেনি এবং হেলিকপ্টারেরও কোনও ক্ষতি হয়নি। কিন্তু এই ঘটনাকে কোনওভাবেই হালকাভাবে দেখা হচ্ছে না। দেশের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক প্রধানের সফরের জন্য নির্মিত একটি হেলিপ্যাডের এমন অবস্থা কেন, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে এবং একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তে মূলত খতিয়ে দেখা হবে:
- হেলিপ্যাডটি নির্মাণের দায়িত্বে কারা ছিল?
- নির্মাণের পর সেটির গুণমান কেন পরীক্ষা করা হয়নি?
- রাষ্ট্রপতির সফরের আগে চূড়ান্ত নিরাপত্তা ছাড়পত্র কে বা কারা দিয়েছিল?
এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল যে, ভিভিআইপি (VVIP) নিরাপত্তায় ক্ষুদ্রতম গাফিলতিও কত বড় বিপদের কারণ হতে পারে। আপাতত, সকলেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন যে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি, তবে ভবিষ্যতের জন্য এটি একটি বড় সতর্কবার্তা হয়ে রইল।


