8th Pay Commission: কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনভোগীদের জন্য একটি অত্যন্ত খুশির খবর। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার (২৭ অক্টোবর, ২০২৫) অষ্টম বেতন কমিশনের (8th Pay Commission) জন্য ‘টার্মস অফ রেফারেন্স’ (ToR) বা শর্তাবলী অনুমোদন করেছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রায় ৫০ লক্ষ কর্মরত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী এবং ৬৯ লক্ষ পেনশনভোগী সরাসরি উপকৃত হতে চলেছে। আশা করা হচ্ছে, নতুন বেতন কমিশনের সুপারিশগুলি আগামী ১ জানুয়ারি, ২০২৬ থেকে কার্যকর হবে, যা লক্ষ লক্ষ কর্মচারীর মাসিক বেতনে একটি বড়সড় পরিবর্তন আনবে।
কমিশনের গঠন এবং কার্যকাল
নতুন গঠিত এই অষ্টম বেতন কমিশনের নেতৃত্বে থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জনা প্রকাশ দেশাই। কমিশনকে তার সম্পূর্ণ রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য মোট ১৮ মাসের সময় দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব সাংবাদিকদের জানান যে, কমিশন একটি অন্তর্বর্তীকালীন রিপোর্টও (Interim Report) সরকারের কাছে পেশ করতে পারে। যদিও চূড়ান্ত বাস্তবায়নের তারিখটি মূলত ১ জানুয়ারি, ২০২৬ থেকেই হবে বলে আশা করা হচ্ছে, তবে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তীকালীন রিপোর্টের ভিত্তিতেও নেওয়া হতে পারে।
বেতন বৃদ্ধির চাবিকাঠি: ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর
কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের বেতন কতটা বৃদ্ধি পাবে, তা মূলত নির্ভর করে ‘ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর’ (Fitment Factor)-এর উপর। এই ফ্যাক্টরটি হল একটি গুণক, যা দিয়ে কর্মচারীর বর্তমান মূল বেতনকে (Basic Pay) গুণ করে নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে কার্যকর হওয়া সপ্তম বেতন কমিশনে (7th CPC) ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ছিল ২.৫৭। এর ফলেই তৎকালীন ন্যূনতম মূল বেতন ৭,০০০ টাকা থেকে এক লাফে বেড়ে ১৮,০০০ টাকা হয়েছিল। তাই অষ্টম বেতন কমিশনে এই ফ্যাক্টর কত নির্ধারিত হয়, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।
অষ্টম কমিশনে বেতন কতটা বাড়তে পারে?
যদিও নবগঠিত কমিশন এখনও পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ঘোষণা করেনি, তবে বিভিন্ন রিপোর্ট এবং বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে একাধিক সম্ভাবনা উঠে আসছে। সপ্তম বেতন কমিশনের উদাহরণ অনুযায়ী, ফিটমেন্ট ফ্যাক্টরের উপর ভিত্তি করেই বেতনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে প্রকৃত বৃদ্ধির পরিমাণ জানতে কমিশনের চূড়ান্ত রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সরকারের লক্ষ্য হল কর্মচারীদের বেতন কাঠামোকে মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখা এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য কর্মীদের উপর প্রভাব
কেন্দ্রীয় স্তরে এই বড় ঘোষণার পর পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মনেও বিভিন্ন প্রশ্ন এবং আশা তৈরি হয়েছে।
এটি কেন্দ্রীয় কমিশন: প্রথমত, এটি মনে রাখতে হবে যে অষ্টম বেতন কমিশন শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের জন্যই গঠিত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের কর্মীরা রাজ্য সরকারের পে কমিশন (ROPA) অনুযায়ী বেতন পেয়ে থাকেন।
পরোক্ষ প্রভাব: তবে, সাধারণত কেন্দ্রীয় বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হওয়ার কিছু সময় পর রাজ্য সরকারগুলিও তাদের কর্মীদের জন্য নতুন পে কমিশন গঠন করে। কেন্দ্রীয় বেতন কাঠামো অনেক ক্ষেত্রেই রাজ্য কমিশনগুলির কাছে একটি বেঞ্চমার্ক বা মাপকাঠি হিসেবে কাজ করে। তাই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত রাজ্যের কর্মীদের জন্যও ভবিষ্যতে বেতন বৃদ্ধির একটি সম্ভাবনা তৈরি করে।
শেষে বলা যায়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এই অনুমোদন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা ২০২৬ সাল থেকে কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি প্রায় নিশ্চিত করছে।
Disclaimer: The information provided in this article is for informational purposes only. It is based on available reports and announcements. Final decisions and figures will be subject to the official report of the 8th Pay Commission and government notifications.


